সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা পেলেন পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি বিএসইসির ১০ম চেয়ারম্যান হিসেবে চলতি বছরের গত ১৯ আগস্ট থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেছেন উপ-সচিব আমিনুল ইসলাম।
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান পদে কর্মকালীন সময় পর্যন্ত সরকারের সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা প্রদান করায় আমরা গর্বিত। এ জন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে তাঁকে জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে বিজ্ঞ কমিশন আগামীতে পুঁজিবাজার সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’
রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘পুঁজিবাজারকে বিশ্বমানের অবস্থানে নিয়ে যেতে যেসব পলিসি সাপোর্ট দরকার, তা নিয়ে কমিশন আগামীতে কাজ করবে। আমরা আশাবাদী যে, বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে আগামীতে ভাইব্রেন্ট, ম্যাচিউরড, এফিশিয়েন্ট এবং সাসটেইনেবল গ্রোথ পুঁজিবাজারে দেখা যাবে।’
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ১০ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এর পর গত ১৮ আগস্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) উপ-সচিব ফরিদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এর ধারা ৫ ও ৬ বিধান প্রতিপালন ও উক্ত আইনের ধারা ৫ (২) অনুসারে আগামী চার বছরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হইলো।
বিএসইসিতে যোগ দেওয়ার আগে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্টের উপদেষ্টা ছিলেন। বাংলাদেশ ও বিদেশে ব্যাংক খাতে ৩০ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের। তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী ছিলেন।
রাশেদ মাকসুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৯২ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবনের শুরু করেন। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে যোগদানের আগে তিনি এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেডের এমডি এবং সিটি ব্যাংক এনএ বাংলাদেশের এমডি ও কান্ট্রি অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাফল্যমণ্ডিত ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে বিভিন্ন করপোরেট ব্যাংকিং গ্রুপে জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনার পদগুলোতে দায়িত্ব পালন করেছেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি ছিলেন সিটি ব্যাংক এনএর আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রুপের প্রধান। এরপর তিনি বাংলাদেশে এই ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেন বিভাগের পরিচালক ও প্রধান হন। তার পরে পদায়ন পান সিটি ব্যাংকের জাকার্তা অফিসের এমডি হিসেবে।
২০১১ সালে রাশেদ মাকসুদকে সিটি ব্যাংক বাংলাদেশের এমডি ও সিটি কান্ট্রি অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশে মাইডাস ফাইন্যান্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।