অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ভারত যদি আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিতে পারতো তাহলে ভারতের সুবিধা হতো। আমাদেরও সুবিধা হতো। কিন্তু সেটা দুঃখজনকভাবে হচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান খুবই ভালো। কিন্তু গত দুই-তিন মাসে যে ব্যবসায়িক মন্দা যাচ্ছে, সেটা কি শুধু বাংলাদেশকে এফেক্ট করছে? এই অবস্থা শুধু বাংলাদেশকে এফেক্ট করছে না, ভারতকেও এফেক্ট করছে। পরিমাণটা অত কিন্তু বেশি না, তবে এফেট পড়ছে। কলকাতার অর্থনীতি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘৪০তম সার্ক চার্টার দিবস’ উপলক্ষে সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) আয়োজিত ‘দ্য সার্ক-পিপল অব সাউথ এশিয়া ক্রেভ ফর’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি এর আগেও বলেছি যে, কোনও সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে স্বীকার করতে হবে যে, সমস্যা আছে। আমাদের এটিও স্বীকার করতে হবে, ৫ আগস্টের আগে এবং পরে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের একটি গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সে হিসেবে আমি প্রস্তাব করেছিলাম, আমাদের যে ফরেন অ্যাফেয়ার্স কনসালটেশন আছে সেটি শুরু করবো।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি, এই অচল অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারব।৷ অচল অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো যোগাযোগ স্থাপন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসছেন। আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করবন। এটা স্ট্যান্ডিং মেকানিজম, এটা অস্বাভাবিক কিছু না। প্রতিবছর আমাদের একজন যান ওপাশে পরের বছর ওপাশ থেকে একজন আসেন। এটাকে কনসাল্টেশন বলা হয়, এটা দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে। আমি আশা করবো, তারা একটা ফলপ্রসূ আলোচনা করবে।
তিনি বলেন, সার্ক শক্তিশালী হোক এই বিষয়ে প্রফেসর ড. ইউনূস অত্যন্ত পজিটিভ এবং আমরা আবারও আঞ্চলিকভাবে একটি স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরে যাই। এটা আমাদেরকে শুরু করতে হব।৷ শুরু করলে একবারে আমরা সবকিছু করে ফেলতে পারবো, সেটি চিন্তা না করাই ভালো। দেশের সরকার অস্থায়ী হতে পারে, কিন্তু দেশ ও স্বার্থ স্থায়ী। আমি নিশ্চিত যে, স্বাভাবিকভাবে সার্ক নিয়ে একটি পজিটিভ অ্যাটিচিউট মানুষের মধ্যে আছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব হচ্ছে- এটিকে এগিয়ে নেওয়া। সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক শুরু হোক, যেটি গত ১০ বছরে হয়নি। তারপর আমরা চেষ্টা করবো্ কীভাবে একটি সামিটে রূপান্তরিত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি পরস্পরকে সহযোগিতা করি, তাহলে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য দূর করা যাবে। দারিদ্র্য থেকে সবাইকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। আমরা কিছুটা সাফল্য অর্জন করিনি তা কিন্তু না। আরও কিছুটা পথ পাড়ি দিতে হবে। সেজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। সার্ককে আমাদের কর্মক্ষমতা পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে৷